Through the Looking Glass
দ টাইগার হু কেম টু টি
জুডিথ কার
পাবলিশারঃ হারপার কলিন্স
GoodRead Rating: 4.2
দ টাইগার হু কেম টু টি একটা ছবির বই, খান ৩৪ পাতা হবে।
গল্পটা হলো একটা বাচ্চা মেয়ে হঠাৎ আবিস্কার করে যে একটা বড়-সর বাঘ তাদের বাড়িতে কড়া নাড়ছে।
তারপর কি হলো? তারপর ভারী মজা হলো, বাচ্চা মেয়ে আর বাঘে মিলে সারাদিন একসঙ্গে কাটালে।
কি করে? সে অনেক কান্ড, সেসব লেখা আছে ছবিতে।
তারপর কি হলো? তারপর সেদিন বাঘ ফিরেগেল।
বাঘ আর এলো না? এলো কি? ... সে তো আমি জানি না।
দ টাইগার হু কেম টু টি বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ছবি-বই গুলর মধ্যে একটা, ১৯৬৮ সাল থেকে হারপার কলিন্স লাগাতার বইটা প্রিন্ট করে চলেছে। তাদের কখনো প্রিন্ট থামাতে হয়নি। এই বইটার অসাধারণত্ব জাদুবাস্তবের খেলনাবাটি সরঞ্জামে তো বটেই, তবে এর শেষটুকু কিন্তু ... ঐ ইংরিজিতে বলে না ... will make you skip a beat. বইয়ের ইলাস্ট্রেশন জুডিথ নিজেই করেছেন। ইলাস্ট্রেশনের কালার স্কিম ওয়ার্ম আর কোল্ড টোনের দুর্দান্ত বৈপরীত্যের সাবলীল ধরপাকড়। হারপারের বই ডিসাইনেরও প্রসংশা করতে হয়, যদিও ২০১৬ এডিশন থেকে হারপার ইলাস্ট্রেটরের নাম আলাদা করে লিখছে না, তবুও তাদের কাজের প্রশংশা করতে হয় এই কারণে যে বইটা ইচ্ছাকৃতভাবে শেষ হয়েছে ভারসো অর্থাৎ বাঁদিকের পাতায়--একটি মাত্র লাইনে। তারমানে, যতক্ষন না আপনি নিজেকে আগের ঘটনাবলিথেকে সরিয়ে এনে সাহস করে পাতা ওলটাচ্ছেন ততক্ষণ আপনি জানতে পারবেন না--আসলে কি হলো! এখানে পাতা ওলটানোর একটা আলাদা মজা আছে--'তারপর কি হলো?'
এটা কিন্ডেলে পড়া যাবে না, কারণ পাতা ওলটাতে না পারলে মনের মধ্যে ঘটমান গুড়গুড়ি সুড়সুড়ি গল্পের ম্যাপে আমাদের হাত পা নড়ে না, আমরা বুঝতে পারিনা আমাদের আর কদ্দুর এগতে হবে, আর এসব মনের কোনে হিসেব করে না নিলে আমরা ঘটনা আর অক্ষরের মধ্যে নিজেদের লগী ছেড়ে দিয়ে উদ্দেশ্যহীনভাবে হাবুডুবু খেতে থাকি--এই হলো গিয়ে হাতে ধরা বইয়ের মজা, ঠিক যেন হ্যাডকের হাতের আস্ট্রল্যাব! রিসার্চধর্মী টেক্সট বইতে যত না এই ধরতে না-পারার অস্বস্তি অনুভব হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি এই অস্বস্তি অনুভব হয় এই ধরনের ছবি-বইতে--এক্ষেত্রে দ টাইগার হু কেম টু টি একেবারে সার্থক, আপনাকে বইটা হাতে ক'রে ধরতে হবে, তবে আপনি হাত নাড়িয়ে পাতা ওলটাতে পারবেন, আর এই উল্টেদেওয়ার কুস্তিটুকু করলেপরে তবেই খুলবে গল্পের দোর।
বইটা আসলে দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ম্যাজিক আঁকড়ে ধরে বাস্তবে টিকে থাকার লড়াই। এই বাস্তব-অবাস্তব-জাদুর মিল জুডিথের আরো অনেক কাজে পাওয়াযায়, কারণ জুডিথ যখন বেশ ছোটো তখন তার বাবা নাৎসি পার্টিকে ক্রিটিসাইস করার জন্য তাদের পলিটিক্যাল আসাইলেম নিতেহয় ব্রিটেনে, সেই অবুঝ চ্যুতি জুডিথের মন থেকে সম্ভবত কোনো দিন মুচ্ছে যায়নি। বলে না, Children do give up their magic and omnipotence only with the hope that she will return to it one day ... বলাযায়, জুডিথ এই ছবি-বইগুলোর মাধ্যমে বার বার তার সেই সুন্দর শৈশবে ফিরে এসেছেন। কিন্তু একা নয়, তার ব্যাক্তিগত বাস্তব-বোধ সমেত, ব্রিটেনে তাঁর বেড়েওঠার বিচ্ছিন্নতা ঝুলিতে ভরে ... লীলা মজুমদার একবার বলেছিলেন বাচ্চাদের সাহিত্য মানে তার মধ্যে কড়া বাস্তবতা থাকবে না এমনটা কখনই নয় বরং বই বাচ্চাকে বাস্তবে তার পছন্দ বেছে নিতে সাহায্য করবে, জুডিথের কাজেও এই কথাটাই খাটে।